Menu

একেই কি বলে সভ্যতা 1860, মধুসূদন দত্ত, প্রহসন

একেই কি বলে সভ্যতা 1860 : বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক প্রহসন মাইকেল মধুসূদন দত্তের একেই কি বলে সভ্যতা। ১৮৬০ সালে প্রকাশিত। বেলগাছিয়া নাট্যশালার জন্য নাটকটি লিখলেও এটি সেখানে মঞ্চস্থ হয় নি।

একেই কি বলে সভ্যতা 1860, মধুসূদন দত্ত, প্রহসন


একেই কি বলে সভ্যতা? ( ১৮৬০ খ্রি:) 

পরিচয়

[ক] মাইকেল মধুসূদন দত্তের প্রহসন জাতীয় রচনা। প্রহসনটিতে ইংরেজি শিক্ষিত ভ্রষ্টাচার তরুণ যুবকদের কাদাচারকে শাণিত রঙ্গব্যঙ্গের ভাষায় দারুণ কশাঘাত করা হয়েছে। 

[খ] মধুসূদনের প্রহসনে গদ্য সংলাপের একটি আদর্শ রূপ গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে ‘একেই কি বলে সভ্যতায় কথা বাকভঙ্গির সাবলীলতা বিশ্বাস উল্লেখযোগ্য। যেমন – হোটেল বক্স নিয়ে মুটেরা যখন এলো তখন বাবাজির উক্তি – ‘রাধাকৃষ্ণ – কি দুর্গন্ধ! ’

আরো পড়ুন--  কপালকুণ্ডলা 1866, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, উপন্যাস

[গ] আলোচ্য প্রহসনের প্রধান চরিত্র নবকুমার, কালীনাথ তার সহচর চরিত্র। কালি যেমন বাড়ি থেকে নবকে ‘জ্ঞান তরঙ্গিনী ’ সভায় নিয়ে গিয়েছিল তেমনই‘বুড় সালিকের ঘাড়ে   রো ’ প্রহসনে গদা ভক্তবাবুকে নিয়ে গিয়েছিল। 

[ঘ] রুচির সুস্থতা ও জীবনাদর্শ বোধের অতন্ত্রতা ছিল প্রহসনটির গুরুত্বপূর্ণ দিক। কি চরিত্রচিত্রন, কি কাহিনীর উপস্থাপনা, কোথাও তার রচনা আচার ভ্রষ্ট বা শ্লীলতাহীন হয়ে পড়েনি। অথচ প্রহসনটিতে কবি নাগরিক কলকাতার তরুণ সমাজকে কটাক্ষ করে আঘাত হেনেছেন। 

আরো পড়ুন--  সবুজ পত্র 1914

[ঙ] মাইকেলের নানা ধরনের বাংলার জ্ঞান ও জনজীবনের সঙ্গে যে নিবিড় যোগ ছিল তার পরিচয় পাওয়া যায় প্রহসনটিতে। তাই তিনি নাট্যসাহিত্য চিরকাল অমর হয়ে থাকবেন। 

[চ] মাইকেলের ‘একেই কি বলে সভ্যতা’র আদর্শে দীনবন্ধু মিত্র ‘সধবার একাদশী ’ লিখেছেন। 

[ছ] ‘মেঘনাদবধ কাব্য ’ প্রমীলা যে বীরাঙ্গনাবৎ কর্ম করেছে, আলোচ্য প্রহসনে হরকামিনী চরিত্রে তার আভাস মেলে।

[জ] সমাজ সমস্যা এই নাটকে আছে কিন্তু তার বাড়াবাড়ি নেই। শাণিত ব্যঙ্গ আছে, কিন্তু তাকে ছাপিয়ে উঠেছে অনর্গল হাসির অফুরন্ত প্রবাহ।

বিশেষত্ব

‘একেই কি বলে সভ্যতা’ সমসাময়িক নব্যবঙ্গের এক নিখুঁত আলেখ্য। ইয়ংবেঙ্গলের কালাপাহাড়ি মনোভাব, অনুকরণ-প্রিয়তা, মদ্যাসক্তি এবং উচ্ছৃঙ্খল তারুণ্য এই প্রহসনে আশ্চর্য দক্ষতায় উদ্ঘাটিত হয়েছে। চরিত্রগুলি শুধু অঙ্কন নয়, একেবারে যেন বাস্তব সমাজ থেকে আহরিত। তাই এঁদের সংলাপ, চরিত্র, বেশভূষা, আমাদের অত্যন্ত সুপরিচিত।

আরো পড়ুন--  সম্বাদ প্রভাকর 1831

বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন – “Is this Civilization? Is the best (farce) in our language.”

রামগতি ন্যায়রত্ন বলেছিলেন – “আমাদিগের বিবেচনায় এরূপ প্রকৃতির যতগুলি পুস্তক রচিত হইয়াছে তন্মধ্যে এইখানি সর্বোৎকৃষ্ট।”


Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: সংরক্ষিত !!