গৌণ সংস্কৃত গদ্যকাব্য : দণ্ডী, সুবন্ধু ও বাণভট্ট – এই তিন শ্রেষ্ঠ কবির আলোচনা করা হয়েছে। এঁরা ছাড়াও অনেকেই গদ্যকাব্য লিখেছেন, কিন্তু কাব্যগুণে সেগুলি নিতান্তই অপরিচিত। এই লেখায় সেগুলির সংক্ষিপ্ত পরিচয় বিধৃত হলো।
গৌণ সংস্কৃত গদ্যকাব্য
শ্বেতাম্বর জৈন ধনপালের ‘তিলকমঞ্জরী’ অপর একটি গদ্যকাব্য। ধারাধিপতি বাষ্পতিরাজের পৃষ্ঠপোষকতায় খ্রীষ্টীয় দশম শতকের শেষদিকে কবি এই কাব্য রচনা করেন। কাব্যের প্রারম্ভিক কয়েকটি শ্লোকে পরমারবংশীয় রাজাদের সঙ্গে বাণ, ভবভূতি, রাজশেখর, রুদ্র, মহেন্দ্র প্রভৃতি কবিদের নাম উল্লিখিত হয়েছে। এখানেই ধনপাল ‘তরঙ্গবতী’ ও ‘ত্রৈলোক্যসুন্দরী’ নামে দুটি কথাকাব্যের নামও উল্লেখ করেছেন। ‘তিলকমঞ্জরী’র মূল উপজীব্য বিষয় হল তিলকমঞ্জরী ও সমরকেতুর প্রণয়কাহিনী। নায়িকা তিলকমঞ্জরীর চরিত্রে বাণের কাদম্বরীর চিত্র স্পষ্ট।
সোলের ‘উদয়সুন্দরীকথা’ রাজা মলয়বাহনের সঙ্গে উদয়সুন্দরীর প্রণয়কাহিনী অবলম্বনে রচিত। ১০২৬ খ্রি. থেকে ১০৫০ খ্রি. মধ্যে এই কাব্যটি রচিত। দিগম্বর জৈন ওডয়দেব বাদীবসিংহের ‘গদ্যচিন্তামণি’ একাদশ লম্বকে বিভক্ত গদ্যকাব্য। সত্যধর ও জীবন্ধরের কাহিনী অবলম্বনে কাব্যটি রচিত। বামনভট্টবাণের ‘বেমভূপালচরিত’ এই শ্রেণীর রচনা। এই গদ্যকাব্যে বাণের হর্ষচরিতের অন্ধ অনুকৃতি সহজেই অনুমেয়। দণ্ডী- সুবন্ধু-বাণের প্রতিভার দীপ্তিতে সংস্কৃত গদ্যকাব্যের আলোকিত সরণি পরভাবী স্বল্প-প্রতিভাধর কবিদের হাতে কিছুটা নিষ্প্রভ হয়ে পড়েছে। তবুও এই কাব্যগুলি সংস্কৃত গদ্যকাব্যের ভাণ্ডারকে অনেকাংশে সমৃদ্ধ করেছে।