Menu

প্রকীর্ণ শ্লোক ও সংকলন গ্রন্থ

Last Updated on January 15, 2022 by বাংলা গাইড

প্রকীর্ণ শ্লোক ও সংকলন গ্রন্থ

মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে বাঙালির সংস্কৃতচর্চার কথা অবান্তর হলেও আদিযুগের উন্মেষ পর্বের বাংলা সাহিত্যের আলোচনায় বাঙালির সংস্কৃত এবং অপভ্রংশ ভাষার রচনাগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করা যায়। মহাকাব্য, আখ্যানকাব্য এবং রসহীন পাণ্ডিত্যপূর্ণ কাব্য সেকালের বাঙালির তেমন রুচিকর ছিল না। ছোট ছোট সংস্কৃত কবিতা বা প্রকীর্ণ শ্লোক এবং অপভ্রংশ ভাষায় রচিত পদ বাঙালির প্রিয় ছিল।

সংস্কৃত শ্লোকের প্রাচীনতম সংকলন দুটি বাংলাদেশে বাঙালির দ্বারাই গ্রথিত হয়েছিল। এই ঘটনার দ্বারাই প্রমাণ হয় যে এ জাতীয় কবিতার দিকে বাঙালির আগ্রহ বেশি ছিল। অবক্ষয়ী সাহিত্যের যুগগত কারণে দেখা দিয়েছিল সংকলনের প্রবণতা। এইসব ক্ষুদ্র কবিতাগুলির তণ্বী রূপটি সংস্কৃতঘেঁষা কিন্তু তার বিষয় আর কল্পনার অলংকরণ বাঙালি কবির।

আরো পড়ুন--  সদুক্তিকর্ণামৃত - শ্রীধর দাস

মোটামুটি চারটি সংকলন গ্রন্থের নাম এখানে উল্লিখিত হল-

[ক] কবীন্দ্রবচন্সমুচ্চয় (সুভাষিতরত্নকোষ ) [খ] সদুক্তিকর্ণামৃত বা সূক্তিকর্ণামৃত [গ] বিদগ্ধমুখমণ্ডল [ঘ] মানসোল্লাস ।

ঐতিহাসিক গুরুত্ব :

  • (ক) খ্যাতিমান প্রাচীন কবির সঙ্গে নবীন অপরিচিত বা সমকালীন কবিদের রচনাসমূহকে একত্রভাবে সন্নিবেশ করা।
  • (খ) সংস্কৃত সাহিত্যের অবক্ষয় এবং রুচি-বিকৃতিকে পূর্ববর্তী কবি-দৃষ্টির ঐতিহ্যের আশ্রয়ে রোধ করার প্রচেষ্টা।
  • (গ) সমকালীন-সচেতনতার অস্ফুট প্রকাশ, দরিদ্র মানুষের জীবনযাপন সম্পর্কে মমতা বা সহনশীলতা।
  • (ঘ) বিষয়-বৈচিত্র্য ও রাজবৃত্তের বাইরে লোকজীবন থেকে কবিতার বিষয়-উপকরণ। সংগ্রহ করার প্রবণতা।
  • (ঙ) সংস্কৃত ভাষা এবং বাংলা ভাষা বা মাতৃভাষার প্রতি কবিদের মমতা প্রকাশ। 
আরো পড়ুন--  গাথাসপ্তশতী

যেমন ‘কবীন্দ্রবচন’ গ্রন্থের একটি আর্যায় একজন বাঙালী কবি লিখেছেন-

ঘন রসময়ী গভীরা রক্তিম সুভগোপজীবিতাকবিভিঃ।

অবগাঢ় চ পুণীতে গঙ্গা বঙ্গাল বাণীষু ।।

অর্থাৎ, গঙ্গা ও বাংলা ভাষায় যারা ডুব দেয়, শুদ্ধতা লাভ করে। গঙ্গা জলপূর্ণ বাংলা ভাষাতেও বিভিন্ন রীতির দৃষ্টান্ত আছে। একটি গৃঢ় ধারায় চলে, অন্যটি মধুর ভাবনায় ভরা। দুয়েই কবিদের আনন্দ।

আরো পড়ুন--  প্রাকৃত ও অপভ্রংশ ভাষায় রচিত সাহিত্য
 
 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: সংরক্ষিত !!