Menu

প্রমথনাথ বিশী বাঙালি ঔপন্যাসিক ও ছোটগল্পকার

Last Update : January 15, 2022

প্রমথনাথ বিশী – বাঙালি ঔপন্যাসিক ও ছোটগল্পকার

 
জন্ম ১৯০১
মৃত্যু ১৯৮৫
 
ছদ্মনাম – বিষ্ণুশর্মা , শ্রীকান্ত শর্মা
 
বালক বয়স থেকেই শান্তিনিকেতনের ছাত্র হওয়ার সুবাদে প্রমথনাথ বিশী অভিভাবক, শিক্ষক, প্রেরণাদাতা হিসেবে পেয়েছিলেন কবিগুরু রবীন্দ্রনাথকে। রবীন্দ্রনাথের সান্নিধ্য ও শান্তিনিকেতনের পরিবেশ বিশীর শিল্পীসত্তার বিকাশে বিশেষভাবে সহায়তা করেছিল। সাহিত্যের বিভিন্ন শাখায় – উপন্যাস, গল্প, নাটক, প্রবন্ধ, সমালোচনা প্রভৃতিতে তাঁর অবদান উল্লেখনীয়। একজন রবীন্দ্র-গবেষক হিসেবে তিনি বাংলা সমালোচনা মহলে সমাদৃত হন।
 

উল্লেখযোগ্য উপন্যাস

জোড়াদিঘির চৌধুরী পরিবার ১৯৩৮
কোপবতী ১৯৪১
পদ্মা ১৯৫৩
কেরী সাহেবের মুন্সী ১৯৫৮
লালকেল্লা ১৯৬৪
জোড়াদীঘির উদয়াস্ত ১৯৬৬
বিপুল সুদূর তুমি যে ১৯৬৮
মুক্তবেণী ১৯৭১
পূর্ণাবতার ১৯৭২
বঙ্গভঙ্গ ১৯৭৪
পনেরোই আগস্ট ১৯৭৮
ধূলো উড়ির কুঠি ১৯৮৫ ইত্যাদি
 

ছোটোগল্প সংকলন

‘শ্রীকান্তের পঞ্চম পর্ব’
‘গল্পের মতো’ ১৯৪৫
‘গালি ও গল্প’ ১৯৪৫
‘ডাকিনী’ ১৯৪৫
‘ব্রহ্মার হাসি’ ১৯৪৮
‘ধনেপাতা’ ১৯৫২
‘চাপাটি ও পদ্ম’ ১৯৫৭
‘নীলবর্ণ শৃগাল’ ১৯৫৭
‘অলৌকিক’ ১৯৫৭
‘এলার্জি’ ১৯৫৮
‘যা হলে হতে পারত’ ১৯৬২ ইত্যাদি
 

উপন্যাস-

১]  প্রমথনাথ বিশীর প্রথম উপন্যাস হল ‘দেশের শত্রু’ (১৯২৪)। স্বদেশী আন্দোলন, বঙ্গভঙ্গ প্রভৃতি বিষয় নিয়ে উপন্যাসটি রচিত।  বলা চলে এটি একটি দেশাত্মবোধক উপন্যাস। একইরকমভাবে স্বদেশি আন্দোলনের পটভূমিতে ‘বঙ্গভঙ্গ’, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের পটভূমিকায় ‘পনেরোই আগস্ট’ উপন্যাস লিখেছিলেন। 
২]  নদী-কেন্দ্রিক দুটি উপন্যাস প্রমথনাথ লিখেছেন – পদ্মা নদীকে কেন্দ্র করে ‘পদ্মা’ এবং শান্তিনিকেতনের কোপাই নদীকে কেন্দ্র করে ‘কোপবতী’ উপন্যাস। 
৩]  বিংশ শতকে ঐতিহাসিক উপন্যাস রচনায় প্রমথনাথ বিশীর কৃতিত্ব শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয়। তাঁর রচিত অন্যতম তিনটি ঐতিহাসিক উপন্যাস হলো – ‘জোড়াদীঘির চৌধুরী পরিবার’ , ‘কেরী সাহেবের মুন্সী’ এবং ‘লালকেল্লা’। 
 
এই তিনটি  উপন্যাসের কাহিনিই উনিশ শতকের। বাংলার জমিদার সম্প্রদায়ের উত্থান-পতনের কাহিনি বিবৃত হয়েছে ‘জোড়াদীঘির চৌধুরী পরিবার’ উপন্যাসে। 
 
‘কেরী সাহেবের মুন্সী’ উপন্যাসে যেমন রয়েছে  উইলিয়াম কেরি ও রামরাম বসুর কথা তেমনই রয়েছে সমকালীন জীবনের ঐতিহাসিক তথ্যের বিবরণ। 
 
তৃতীয় উপন্যাসটি ১৮৫৭-এর সিপাহি বিদ্রোহকে কেন্দ্র করে। উপন্যাসটি ধারাবাহিকভাবে ১৯৬২-৬৩ সালে ‘দেশ’ পত্রিকার প্রকাশিত হয়েছিল। নায়ক জীবনলালের কাহিনি এখানে  বর্নিত হয়েছে। 
 
৪]  মহাভারতের যদুবংশের কাহিনি নিয়ে রচিত হয়েছে ‘পূর্ণাবতার’। যাযাবর ও কৃষকদের সংঘাত নিয়ে রচিত হয়েছে ‘বিপুল সুদূর তুমি হে’। 
 

ছোটোগল্প –

১]  প্রবাসী, দেশ, শনিবারের চিঠি, আনন্দবাজার প্রভৃতি পত্রিকায় তাঁর গল্পগুলি প্রকাশিত হয়েছিল। ইতিহাসাশ্রিত গল্প, রোমান্টিক গল্প, ভূতের গল্প, রঙ্গ-ব্যঙ্গের প্রভৃতি গল্প রচনায় তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন। ‘শনিবারের চিঠি’তে তিনি বিষ্ণুশর্মা ছদ্মনামে ‘নূতন কথামালার গল্প’ লিখে ‘কল্লোল’ গোষ্ঠীকে কটাক্ষ করেছিলেন।  
২]  তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘শ্রীকান্তের পঞ্চম  পর্ব’। শরৎচন্দ্রের চারখণ্ডে রচিত ‘শ্রীকান্ত’ উপন্যাসের পঞ্চম পর্ব হিসেবে এই গ্রন্থের পরিকল্পনা করেছেন। হাস্য রসাত্মক কাহিনি এর মূল উপজীব্য।
৩]   ইতিহাসাশ্রিত গল্পের সামাহার লক্ষ করা যাবে ‘ধনেপাতা’ গল্পগ্রন্থের গল্পগুলিতে। এছাড়া ‘চাপাটি ও পদ্ম’ গ্রন্থের গল্পগুলিও ইতিহাসের কাহিনি কেন্দ্রিক। 
৪]  ব্যঙ্গের কশাঘাত রয়েছে এমন গল্প সংকলন হল – ‘গল্পের মতো’, ‘গালি ও গল্প’ ইত্যাদি।
 
প্রমথনাথ বিশী ছিলেন বিচিত্র প্রতিভার অধিকারী। উপন্যাস ও ছোটগল্পে তাঁর এই প্রতিভা  মুদ্রিত হয়ে থাকবে। বিশ শতকের একজন উল্লেখযোগ্য কাহিনিকার হিসেবে তিনি অনন্য।
————————————–
————————————–

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: সংরক্ষিত !!