Menu

Category: সাহিত্য টীকা

গঙ্গারামের মহারাষ্ট্র পুরাণ

গঙ্গারামের মহারাষ্ট্রপুরাণ      চৈতন্যচরিত সাহিত্যে তথ্যাশ্রয়ী যুগ-বীক্ষণের সূচনা হয়। কাব্যের মধ্যে সমকালীন ইতিহাসের প্রতিফলন দেখা গিয়েছিল তবু তা পূর্ণরূপ নয় পদক্ষেপ, পূর্ণাঙ্গ, কাহিনীর আশ্রয়ে নয়, অনুসঙ্গী ও সহায়িকার রূপে তা স্থান পায়। সেই রূঢ় বাস্তবের তাপ ও ইতিহাসের উত্তাপ পূর্ণভাবে পাওয়া গেল যে-গ্রন্থে, তার নাম ‘মহারাষ্ট্রপুরাণ’ বা ‘ভাস্কর পরাভব’, বিষয়—মারাঠা অধিপতি সাহু (রঘুজী ভৌসলা) …

ভক্তিরত্নাকর | নরহরি চক্রবর্তী

ভক্তিরত্নাকর | নরহরি চক্রবর্তী   দুই নামে একই ব্যক্তি বৈষ্ণবধর্মের সমাজ ও সংস্কৃতির ঐতিহাসিক উপাদান গ্রন্থরূপে ভক্তিবাকর এক স্মরণীয় রচনা। পঞ্চাদশ তরঙ্গে বিভক্ত এই গ্রন্থের বিষয় ষোড়শ থেকে অষ্টাদশ পর্যন্ত দু’শ বছরের বৈষ্ণব সমাজ ও সম্প্রদায়ের বিবরণদান। তার মধ্যে আবার পঞ্চম তরঙ্গে আছে মার্গ সঙ্গীতের বিশেষ উপস্থাপনা। গ্রন্থকার নরহরি চক্রবর্তী ও ঘনশ্যাম দাস নামে একই …

জাগরণ পালা | সাহিত্য টীকা

জাগরণ পালা | সাহিত্য টীকা     সারারাত জেগে নৃত্যগীতের যে অনুষ্ঠান করা হত, মধ্যযুগের বঙ্গদেশে সাধারণত তাকেই ‘জাগরণ’ বা ‘জাগের গান’ বলা হতো। এই জাতীয় গানের মধ্যে উত্তরবঙ্গের ধামালী গান এবং ঝুমুর গানের নাম উল্লেখ করা যায়। এই গানগুলির যে অংশ গভীর রাতে না ঘুমিয়ে পড়ে ভোর পর্যন্ত গাওয়া হতো, তাকেই বলা হতো জাগরণ …

রামাই পণ্ডিতের শূন্যপুরাণ

রামাই পণ্ডিতের ‘শূন্যপুরাণ’  রামাই পণ্ডিতের শূন্যপুরাণ-আলোচনা বাংলা সাহিত্যের ধর্মমঙ্গল কাব্য প্রসঙ্গে হয়ে থাকে। ‘শূন্যপুরাণ’ বিষয়ে এই পোস্টে আলোচিত হবে। বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে  এর মুল্য রয়েছে। শূন্যপুরাণ সমস্যা রামাই পণ্ডিতের ‘শূন্যপুরাণ’-এর কাল নিয়ে কিছুটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল। নগেন্দ্রনাথ বসু, দীনেশচন্দ্র সেন প্রমুখ গবেষকগণ শূন্যপুরাণের ভাষাকে খুব পুরানো বলে মনে করেছিলেন। রামাই পণ্ডিতকে তাঁরা দশম-একাদশ শতকের বলে …

কবি চূড়ামণি দাসের কবি পরিচয় | গৌরাঙ্গবিজয় কাব্যের পরিচয়

কবি চূড়ামণি দাস ও তাঁর কাব্য গৌরাঙ্গবিজয় কাব্যের কথা   কয়েকখানি চৈতন্যচরিত গীতিকাব্য ‘পাঁচালী প্রবন্ধ’ রীতিতে রচিত হয়েছিল। তার মধ্যে একটি অংশতঃ, আর একটি সম্পূর্ণ। চূড়ামণি দাসের ‘গৌরাঙ্গ বিজয়’ কাব্যটি অসম্পূর্ণ। সম্ভবতঃ সপ্তদশ শতকের শেষার্ধে গ্রন্থটি লেখা হয়। আদি, মধ্য, অস্ত্য খণ্ডে গ্রন্থটির কথা ও কাহিনী বিভক্ত। লাচাড়ি অংশের তুলনায় ‘শিকলি‘ অংশই বেশি। নিত্যানন্দ অনুচর …

প্রাকৃতপৈঙ্গল

প্রাকৃতপৈঙ্গল   ভাব, বিষয়বস্তু ও ভাষা-কৌশলের দিক থেকে এই গ্রন্থটি বাঙালী জীবন ও সংস্কৃতির সঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। গ্রন্থটি শৌরসেনী প্রাকৃত ও অপভ্রংশে লেখা হয়। বিভিন্ন কবি-রচিত শ্লোকের সঙ্কলন। সংকলকের নাম, পিঙ্গল। ইনি ‘পিঙ্গল ছন্দসূত্র’ গ্রন্থাকার নন। পণ্ডিতজনের অনুমান, ১৪শ শতাব্দীতে কাশীধামে ‘প্রাকৃতপৈঙ্গল’ সঙ্কলিত হয়। এই গ্রন্থেও রাধা ও গােপালীলার উল্লেখ আছে, আছে বিভিন্ন দেবদেবীর সঙ্গে …

গাথাসপ্তশতী

গাথাসপ্তশতী   মহাকবি হাল এই গ্রন্থটির রচয়িতা। এই ‘হাল’ দক্ষিণ ভারতের সাতবাহন বংশের নরপতি হাল, না শালবাহন নামে কোন রাজা এর রচয়িতা, সে সম্পর্কে পণ্ডিত মহলে সন্দেহ বর্তমান। রচয়িতার নাম-পরিচয়ের সমস্যার জন্য গ্রন্থটির রচনাকালও সঠিকভাবে নির্ণীত হয় নি। তবে ‘কবীন্দ্রবচনসমুচ্চয়’,  ‘সদূক্তিকর্ণামৃত’, ‘সুভাষিতাবলী’ প্রভৃতি গ্রন্থের বহু শ্লোকের মধ্যে হালের এই কাব্যটির প্রভাব লক্ষ করা যায়, বিশেষতঃ রাধার …

সুভাষিত রত্নকোষ বা কবীন্দ্রবচনসমুচ্চয়

সুভাষিত রত্নকোষ তুর্কী আক্রমণ-পূর্ব বাংলাদেশে কবিতাকৃতির সর্বোৎকৃষ্ট নিদর্শন হল ‘কবীন্দ্রবচনসমুচ্চয়’ (‘সুভাষিত রত্নকোষ’)। ‘কবীন্দ্রবচনসমুচ্চয়’-এর পুঁথি নেপালে পাওয়া যায়। নেওয়ালি অক্ষরে লিখিত এই খণ্ডিত পুথি সম্পাদনা করে প্রকাশ করেন এফ. ডবলিউ. টমাস ১৯১২ সালে। পুঁথিটির প্রথম দিকের কিছু অংশ নষ্ট হওয়ায় এর প্রকৃত নাম কি ছিল তা জানা যায়নি। টীকার এক জায়গায় ‘কবীন্দ্রবচনসমুচ্চয়’ এই শব্দগুলি আছে বলে …

সদুক্তিকর্ণামৃত – শ্রীধর দাস

সদুক্তিকর্ণামৃত     বাংলাদেশে সংকলিত একটি জনপ্রিয় চয়নিকা হল ‘সদুক্তিকর্ণামৃত’। এই চয়নিকার সংকলক হলেন রাজা লক্ষ্মণসেনের ‘প্রেমৈক পাত্র সখা’ বটুদাসের সুযোগ্য পুত্র ‘মহামাণ্ডলিক’ শ্রীধর দাস। এই চয়নিকাতে দ্বাদশ-ত্রয়োদশ  শতকের বাঙালি জীবন ও সমকালীন সমাজের যে প্রতিফলন প্রতিফলিত হয়েছে, সেদিক থেকে উক্ত গ্রন্থের গুরুত্ব যথেষ্ট। মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্য এই চয়নিকার প্রভাব অপরিসীম। ১২০৬ খ্রিষ্টাব্দে ‘সদুক্তিকর্ণামৃত’ সংকলিত …

ভক্তিরসামৃতসিন্ধু – শ্রীরূপ গোস্বামী

ভক্তিরসামৃতসিন্ধু   শ্রীচৈতন্যের স্নেহধন্য শ্রীরূপ গোস্বামী (হুসেন শাহের কর্মচারী দবীর খাস)-র বৈষ্ণব রসশাস্ত্র সম্পর্কিত বিখ্যাত গ্রন্থ হল ‘ভক্তিরসামৃতসিন্ধু’। এই গ্রন্থ প্রমাণ করে, শ্রীরূপ ছিলেন একজন বিশিষ্ট কবি ও রসশাস্ত্রের বোদ্ধা। তাঁর এই গ্রন্থের দ্বারা বৈষ্ণব সমাজ তো বটেই, সেইসঙ্গে সপ্তদশ-অষ্টাদশ শতাব্দীর বৈষ্ণব পদকর্তারা প্রভাবিত হয়েছিলেন। জীব গোস্বামী এই গ্রন্থের টীকা রচনা করে নাম দেন ‘দুর্গমসঙ্গমণি’। …

error: সংরক্ষিত !!