Last Update : April 26, 2024
কড়চা
কোন বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে সংক্ষিপ্ত বিবরণ প্রদানকে ‘কড়চা’ বলে। এর আকার অত্যন্ত ক্ষুদ্র। উৎপত্তিগত অর্থ, কা-চা, র-ড; তুল-পত্রপত্রিকা হতে পর্চা পাতড়া (তথ্য সূত্র : ‘বাঙ্গালা ভাষার অভিধান’ জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস, পৃষ্ঠা ৪১২)। অন্যমতে, কড়চা শব্দটির উৎস সম্ভবত ‘কারিকা’। ‘কারিকা’ অর্থে সংস্কৃত অভিধানে বলা হয়েছে ‘কারিকা বিবরণ শ্লোক’। কারিকাতু স্বল্পবৃত্তে বহোরহস্য সূচনম”। দিনলিপির (diary) আকারে রাখা বিবরণ, জীবনবৃত্তান্ত বা ঐতিহাসিক ঘটনার সংক্ষিপ্ত বিবরণকেও ‘কড়চা’ বলা হয়েছে।
বৈষ্ণব যুগে শব্দটি সংস্কৃত ভাষার মর্যাদা পেয়েছিল—“তথাপি শ্রীরূপ গোস্বামি কড়চায় : শ্লোক” ইত্যাদি। জগদীশ্বর গুপ্তের টীকাতেও আছে—“অম্মদারভ্য নবশ্লোক্যঃ শ্রীরূপগোস্বামীকড়চোদ্ধৃতাঃ” ইত্যাদি।
আবার শ্রীচৈতন্যদেবের জীবন সম্পর্কিত ক্ষুদ্র বিবরণগুলিকে ‘কড়চা’ নামে অভিহিত করা হয়; যেমন-মুরারী গুপ্তের কড়চা, স্বরূপ দামোদরের কড়চা, গোবিন্দদাসের কড়চা প্রভৃতি।
সাহিত্যিক নমুনা বাদে জমিদারী মহাজনী কাজে যে কাগজে কোন্ প্রজার কত খাজনা কত তারিখে আদায় হল ও কত বাকি রইল তার বিবরণ (ওয়াশীল বাকী বহি) লেখা হয়, তাকেও ‘কড়চা’ বলা হত। মিশনারীরাও এই শব্দটি ব্যবহার করেছেন।