Last Update : April 28, 2024
সম্বাদ প্রভাকর ১৮৩১
সম্পাদক, প্রকাশকাল/আবির্ভাব :
সাপ্তাহিক ‘সম্বাদ প্রভাকর’ ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের সম্পাদনায় ১৮৩১ খ্রিস্টাব্দের ২৮শে জানুয়ারি প্রথম প্রকাশিত হয়। ১৮৫৩ খ্রিস্টাব্দে ‘সম্বাদ প্রভাকরে’র মাসিক সংস্করণ প্রকাশিত হয়। শেষ পর্যন্ত ‘সম্বাদ প্রভাকর’ সাপ্তাহিক, মাসিক এবং দৈনিক প্রকাশিত হতে থাকে।
পরিচিতি:
‘সম্বাদ প্রভাকর’ সপ্তাহে তিনবার প্রকাশিত হয়। এই পত্রিকা প্রথম বাঙালি সাংস্কৃতিক জীবনের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। কলকাতার নবীন ও প্রবীণ উভয় দলই এই পত্রিকার পৃষ্ঠপোষক ছিলেন। সহায়সম্বলহীন ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত ছিলেন এই পত্রিকার সম্পাদক।
অবদান/গুরুত্ব :
এই পত্রিকা বাঙালিকে নানাভাবে প্রভাবিত করেছে। কেননা ‘সম্বাদ প্রভাকর’ প্রাচীন ও নবীন উভয় সমাজের মধ্যে সংযোজকের কাজ করেছে, যেখানে ‘সমাচার চন্দ্রিকা’ ও শেষের দিকে ‘সম্বাদ কৌমুদী’ ছিল পুরাতনপন্থী সমাজের প্রতিভূ। এটি বাংলার প্রথম পত্রিকা যাতে সাহিত্য রচনার বিশেষ প্রাধান্য ছিল। এতে ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের লেখকগোষ্ঠীর নবীন শিষ্যদের অনেকেই প্রবন্ধ ও কবিতা লিখতেন
এবং ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত তাদের উৎসাহিত করতেন। ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত যুগের বাণীকে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। তাই তাঁর পত্রিকা হয়ে উঠেছিল যুগোচিত। সংবাদ, রাজনৈতিক মন্তব্য, ইংরেজ শাসনের সমালোচনায় ও আধুনিক শিক্ষাপ্রচারে ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত যথেষ্ট মনোবলের পরিচয় দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ, সমাজ, ধর্ম, দীক্ষা, সাহিত্যসংক্রান্ত বুদ্ধিদীপ্ত আলোচনা তাঁর পত্রিকাতেই প্রথম প্রকাশিত হয়। তাই তাঁকে ‘বাংলা বার্তাজীবীদের গুরু’ বলা হয়।
ভাষার দৃষ্টান্ত :
ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত নিজে সাংবাদিক হওয়ায় ভাষার মধ্যে সাংবাদিকতার ছাপ যথেষ্ট। যেমন—“এদেশে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হইবার যে কল্পনা স্থির হইয়াছে। তাহা অতি উত্তম। ইংল্যান্ড দেশে যে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে যে প্রকার অঙ্কের শিক্ষা হয়ে থাকে এদেশীয় লোক তাহার কোন বিষয়েই শিক্ষা করিতে অক্ষম নহে।”
সাহায্য: দেবেশকুমার আচার্য